মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ আরও একটি ‘ক্লু’লেস হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করল মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সায়েস্তাবাদে গৃহবধূ ফরিদা আক্তার মনি খুনের এই মামলাটি দীর্ঘদিন কাউনিয়া পুলিশ তদন্ত করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। কিন্তু সেই মামলাটি মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে রহস্য উন্মোচনে সফল হয়েছে ডিবি পুলিশ। ডিবি পুলিশের চৌকস কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন এই মামলায় গ্রেপ্তার গৃহবধূর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে সকল রহস্য। শাহীন খান (৩৫) তিনি স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি ডিবি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
পরে অবশ্য তিনি রোববার আদালতেও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অথচ কাউনিয়া থানা পুলিশ দাবি করে আসছিল মামলাটি ‘ক্লু’লেস। এই ক্লুলেস মামলাটির রহস্য উন্মোচন করে প্রসংশিত হয়েছেন এসআই দেলোয়ার। ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়- এর আগেও একাধিকবার ক্লুলেস মামলার রহস্য উন্মোচনে সফল হয়েছেন এসআই দেলোয়ার হেসেন।
মূলত তার কারিশমার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েই গত মাসের শেষ দিকে মামলাটির তদন্তভার দেন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। অবশ্য এবারও সেই কারিশমাই পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাকে দেখাতে সক্ষম হয়েছেন দেলোয়ার। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্র জানায়- ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টম্বর স্বামীর বাড়ি সায়েস্তাবাদের হায়াতসার থেকে চাদপুরের হাজিগঞ্জের আলী আহমদ মিজির মেয়ে ফরিদা আক্তার মনির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় স্বামী পরিবারের দাবির প্রেক্ষিত্রে সংশ্লিষ্ট কাউনিয়া থানা পুলিশ আত্মহত্যা হিসেবে একটি অপমৃত্যু মামলা গ্রহণ করে।
কিন্তু মেয়েটির এই ঘটনায় একই বছরের ২০ নভেম্বর বরিশাল আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার আসামি ফরিদা আক্তার মনির স্বামীকে চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হলেও থানা পুলিশ রহস্য উন্মোচন করতে পারছিল না। পরে এই মামলাটি গত ৯ জুলাই বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান ডিবি পুলিশকে তদন্ত দেন। একপর্যায়ে ডিবি পুলিশের পক্ষে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন এসআই দেলোয়ার হোসেন। সম্প্রতি এই পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার স্বামী শাহীন খানকে রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক আসামির তিন দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করলে এসআই দেলোয়ার তাকে রোববার হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাবাদ করেন। ওই জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করতে বাধ্য হন স্ত্রী ফরিদা আক্তার মনিকে তিনি নিজেই খুন করেন এবং পরবর্তীতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন।
এই হত্যাকান্ডে তাকে সহযোগিতা করেন ছোট ভাই নাসির খান। কিন্তু হত্যাকান্ডের পরপরই নাসির দেশের বাইরে চলে যান। ডিবি পুলিশের এসআই দেলোয়ার জানান, রিমান্ডে স্বীকারের পরে শাহীন খান স্ত্রীকে খুনের বিষয়টি আদালতে বিচারকের সামনেও স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
Leave a Reply